চৌগাছায় সরকারি বিলে মাছ ছাড়তে গিয়ে এলাকাবাসির ধাওয়া খেয়ে গুলি ভর্তি ম্যাগজিন ফেলে পালিয়ে গেল দখলদাররা

চৌগাছায় সরকারি বিলে মাছ ছাড়তে গিয়ে এলাকাবাসির ধাওয়া খেয়ে গুলি ভর্তি ম্যাগজিন ফেলে পালিয়ে গেল দখলদাররা

মোঃ রুহুল আমিন,চৌগাছা (যশোর) প্রতিনিধিঃ

যশোরের চৌগাছার পাশাপোল ইউনিয়নের কালিয়াকুন্ডের সরকারি বিল এড়োলে মাছের পোনা ছাড়তে গিয়ে এলাকাবাসির ধাওয়া খেয়ে পালিয়েছে দখলদার।

এলাকাবাসির অভিযোগ সোমবার দুপুরে ধাওয়া খেয়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় তারা পিস্তলের ম্যাগজিন ও এক রাউন্ড গুলি এবং একটি পালসার মোটর সাইকেল ফেলে যায়।দশপাকিয়া ফাঁড়ির ইনচার্জ জলিল উদ্দীন ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।  

স্থানীয় মইনুর হোসেন, ওমর ফারুখ, জাফর আলী, আয়ুব আলী জানান, বিল এড়োলের সরকারি জমি দখল করে মাছ চাষ করে আসছিল স্থানীয় নারী ইউপি সদস্য মমেনার স্বামী জুল হোসেন। সরকারি বিল দখল করে ভেঁড়ি বাধ তৈরি করে মাছ করায় এলাকার গোপিনাথপুর, বড়কুলি, দশপাখিয়া, রঘুনাথপুর, মৎস্যরাঙ্গা, বুড়িয়ান্দিয়া গ্রামের কয়েকশ বিঘা জমির ফসল বর্ষা মৌসুমে পানির নিচে তলিয়ে যায়।

এ ঘটনায় ভুক্তভোগী এলাকাবাসি সরকারি বিল অবমুক্তকরনের জন্য ১ জুলাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও জেলা প্রশাসকের নিকট স্বারকলিপি দন। স্বারকলিপি পেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা ভুমি কমিশনার ২৩ জুলাই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। পরে ৩০ জুলাই তৎকালিন উপজেলা নির্বাহী অফিসার জাহিদুল ইসলাম ও উপজেলা কমিশনার ভুমি নারায়ণ চন্দ্র পাল ঘটনাস্থলে গিয়ে বিল অবমুক্ত ঘোষনা করেন। অবমুক্ত ঘোষনা করার পরেও দখলদার জুল হোসেন এলাকাবাসিকে নানাভাবে হুমকি দিচ্ছিল।  

আজ সোমবার দুপুরে জুল হোসেন বিলে মাছের পোনা ছাড়তে যায়। এসময় জুল হোসেনের চার ছেলে তরিকুল ইসলাম, বাবুল হাসান, মজনু, রফিকুল ইসলাম, জুল হোসেনের স্ত্রী মোমেনা, সলুয়া গ্রামের আজিজ, রহিদুল্লাহ, শেখ পাড়ার আলামিন, চন্দ্রপুর গ্রামের মঙ্গলের ছেলে সুমনসহ ৪০/৫০ টি মোটর সাইকেলে জুল হোসেনের পক্ষে ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসীরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। খবর পেয়ে গ্রামবাসিও বিলপাড়ে উপস্থিত হয়। এক পর্যায়ে জুল হোসেনের ছেলে মজনু এলাকাবাসিকে টার্গেট করে গুলি ছুড়তে যায়। এসময় উপস্থিত গ্রামবাসির কোনো একজন মজনুর হাতে আঘাত করে।  এতে মজনুর হাত থেকে পিস্ততলের ম্যাগজিন পড়ে যায়। খবর ছড়িয়ে পড়লে উপস্থিত জনগন তাদেরকে ধাওয়া করে। দখলদাররা গ্রামবাসির ধাওয়া খেয়ে পালিয়ে যায়।  খবর পেয়ে দশপাকিয়া ফাঁড়ির পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে একটি ম্যাগজিন, এক রাউন্ড গুলি একটি নম্বরহীন পালসার মোটর সাইকেল উদ্ধার করেন।


এদিকে অভিযুক্ত জুল হোসেন বলছেন, আমি মাছ ছাড়তে যায়নি। শুনলাম সলুয়ার কেউ আমার ভেঁড়িতে মাছ ছাড়তে গিয়েছে। আমি ও আমার ছেলেরা সেখানে দেখতে গিয়েছিলাম; কারা আমার ভেঁড়িতে মাছ ছাড়ছে। এতে গ্রামের লোকজন আমার এক ছেলেকে কুপিয়ে জখম করেছে। সে যশোর সদর হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। আমিও আহত। আমি চৌগাছা উপজেলা সরকারি হাসাপাতালে ভর্তি রয়েছি।

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান অবাইদুল ইসলাম সবুজ বলেন, বিলের জমি নিয়ে মামলা চলছে। মামলা শেষ না পর্যন্ত উভয় পক্ষকে শান্ত থাকতে বলা হয়েছিল। জুলহোসেন হঠাৎই প্রশাসনকে না জানিয়ে নিজ ইচ্ছায় মাছ ছাড়তে গিয়ে ভূল করেছেন।

উপজেলা কমিশনার (ভুমি) নারায়ণ চন্দ্র পাল বলেন, বিলটি তৎকালিন উপজেলা নির্বাহী অফিসার জাহিদুল ইসলাম ও আমি নিজে গিয়ে বিলটি অবমুক্ত ঘোষনা করি।

বর্তমান উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রকৌশলী এনামুল হক বলেন, সে সময় কি হয়েছিল, আমি আমি ফাইল না দেখে কিছু বলতে পারছিনা।

চৌগাছা থানার ওসি রিফাত খান রাজিব বলছেন এ ঘটনায় অস্ত্র আইনে মামলার প্রস্তুতি চলছে।

আপনি আরও পড়তে পারেন